Visa Copy

Visa Copy

Visa Copy

বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষেরই স্বপ্ন থাকে আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করার। সময়, সুযোগ ও প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক যোগ্যতার কারণে অনেকেরই স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে যায়। আপনাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার প্রয়াসে আমরা আবারও শুরু করেছি EB-3 প্রোগ্রাম! প্রথমেই বলে নিচ্ছি, এই প্রোগ্রামটি সবার জন্য না!!! জী আপনি ঠিকই দেখেছেন এই প্রোগ্রামটি সবার জন্য না!!! কারণ বাংলাদেশের সবার এই ধরনের অর্থনৈতিক যোগ্যতা থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং না বুঝে, না জেনে বাজে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা আঙ্গুর ফল টক হয় কখন সেটা আপনি জানেন।

আপনাদের অনেকের কাছেই বিষয়টি নতুন হওয়ার কারণে পুরো প্রোগ্রামটি এখানে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিচ্ছি।

EB3 মানে হচ্ছে Employment Based-3 Greencard! এই ক্যাটাগরিতে তিনটি প্রোগ্রাম রয়েছে EB-1, EB-2 & EB-3 !!

এই ক্যাটাগরিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল পরিচিত হচ্ছে EB3 প্রোগ্রাম। এটি মূলত ইউরোপের ওয়ার্ক পারমিট এর মত একটি বিষয়, যেমন বর্তমানে ইতালিতে চলতেছে অর্থাৎ ওই দেশের কোন কোম্পানি যদি আপনাকে স্পন্সর করতে চায় তাহলে তারা আপনাকে ওই দেশের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে নিয়ে যেতে পারবে। সাধারণত এই প্রোগ্রামে যে কোম্পানিগুলো স্পন্সর করে থাকে তারা কম মূল্যে সস্তা শ্রমের জন্য স্পন্সর করে থাকে। কোম্পানিভেদে স্পন্সরের জন্য বিভিন্ন ফি এবং যোগ্যতা নির্ধারণ করে থাকে। কোন কোম্পানি অনার্স ডিগ্রি চাইতে পারে আবার কোন কোম্পানি বলতে পারে কোন পড়ালেখা জানার দরকার নেই।

এবার আসি এই প্রোগ্রামের কার্যক্রম বা প্রসেস কিভাবে হয়। এই পুরো প্রোগ্রামটি ৬ টি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। আপনাদের সুবিধার্থে প্রত্যেকটি ধাপ বিস্তারিত এখানে তুলে দিচ্ছিঃ

১ম ধাপ: Valid Job offer: এই প্রোগ্রামে আবেদন করতে গেলে প্রথমেই আপনাকে একটি বৈধ জব অফার' জোগাড় করতে হবে। এই জব অফারটাই মূলত এই প্রোগ্রামের মূল কাজ। আপনি যদি আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন পরিচিত কারো মাধ্যমে এই অফার জোগাড় করতে পারেন তাহলে অভাবনীয় কম খরচে আমেরিকায় পাড়ি দিতে পারবেন। যদি আপনার এরকম কোনো ব্যবস্থা না থাকে তাহলে আমেরিকায় বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্ট বা হেড হান্টার কোম্পানি আছে যারা আপনাকে একটি নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে জব অফার যোগাড় করে দিবে। এই ধরনের কোম্পানিগুলো সাধারণত ১৫০০০-২৫০০০$ নিয়ে থাকে তাদের ফি। এখানে একটা কথা উল্লেখ্য যে শুধুমাত্র বাংলাদেশি, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান বা এ সমস্ত দেশের ক্ষেত্রে এই টাকাগুলো অগ্রিম নিয়ে নেয় অন্যান্য দেশের কর্মীদের ক্ষেত্রে মাসে মাসে স্যালারি থেকে কেটে নেয়। আমাদের এই অঞ্চলের মানুষ ওখানে গিয়ে কাজ করবে না এটা জানে সেই কারণে আগেই বড় অঙ্কের টাকা ইনভেস্ট করতে হয়।

২য় ধাপ: PWD- Prevailing wage request. এই ধাপে আপনাকে যিনি স্পন্সর করবেন অর্থাৎ মালিক কে US Department of Labor (DOL) একটি আবেদন করতে হবে যে আপনাকে তিনি কত টাকা বেতন দিতে চাচ্ছেন এবং যে বেতন দিতে চাচ্ছেন সেই বেতনটি সর্বনিম্ন বৈধ বেতনের নিচে না। আর যে বেতন তিনি দিতে চাচ্ছেন সেটি আপনি খুশি মনে মেনে নিয়েছেন। এই ধাপে কোন ফি সরকারকে জমা দিতে হয় না। বিনামূল্যে আবেদন করা যায়। সরকারের পক্ষ থেকে এর জবাব পেতে ১ থেকে ৬মাস অপেক্ষা করা লাগতে পারে।

৩য় ধাপ: Labor Certificate: Placing Ad & Recruiting। এই ধাপে আপনার মালিক কে ওই দেশের ডিপার্টমেন্ট অফ লেবার কে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরও এই ধরনের শ্রমিক আমেরিকায় খুঁজে পাননি। এই কারণে বাধ্য হয়ে আপনাকে নিয়োগ দিচ্ছেন। এই ধাপটি মূলত জটিল এবং এখানে টেকনিক্যালি কিছু কাজ করতে হয়। এই ধাপে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া বাধ্যতামূলক। এছাড়াও মাঝে মাঝে ওই দেশের ডিপার্টমেন্ট অফ লেবার নির্দিষ্ট পোর্টালে বিজ্ঞাপন প্রচার ও প্রসারের জন্য নির্দেশনা দিয়ে দেয়। এই ধাপে কমপক্ষে এক মাস এবং সর্বোচ্চ তিন মাস সময় লাগতে পারে। এবং এই ধাপে বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য ১৫০০ থেকে ৩৫০০ ডলার খরচ হতে পারে। যেহেতু এখানে খরচ হয় সেহেতু এই খরচ গুলি শ্রমিককে বহন করতে হয়। দেখা যায় অনেক সময় আপন বড় ভাই ছোট ভাইয়ের জন্য এতগুলো টাকা খরচ করতে চায়না। যদিও এগুলো মালিকের খরচ করার কথা তবে বাস্তবতা ভিন্ন।

চতুর্থ ধাপঃ Labor Certificate: Filing ETA Form 9089(PERM): পত্রিকা এবং অন্যান্য মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয়ার পর সেই বিজ্ঞাপনের কপিসহ ডিপার্টমেন্ট অফ লেবার এর কাছে আবেদন করতে হয় লেবার সার্টিফিকেটের জন্য যেটা আমরা বাংলাদেশীরা ইউরোপের ভাষায় ওয়ার্ক পারমিট নামে চিনি। আমেরিকাতে এটাকে প্রেম বলে। এই ফর্ম পূরণ করে জমা দেয়ার পর অর্থাৎ ওয়ার্ক পারমিট আবেদন করার পর তিনটি ঘটনা ঘটতে পারে। প্রথমত আপনার আবেদন একসেপ্ট বা গৃহীত হতে পারে। দ্বিতীয়তঃ আপনার আবেদন বাতিল বা রিজেক্ট হতে পারে। তৃতীয়তঃ আপনার এই আবেদনের প্রক্রিয়া টি অডিট হতে পারে। অর্থাৎ তৃতীয় একটি পক্ষ নিযুক্ত করে দেখবে আপনি যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন সেটি ঠিক আছে কিনা। এই ধাপে কমপক্ষে আট মাস সময় লাগে। সর্বোচ্চ ১২ মাস লেগে যাওয়ার উদাহরণও আছে।

পঞ্চম ধাপঃ File Form I-40: আপনার প্রেম আবেদন যদি রিজেক্ট না হয়ে অডিট হয় তাহলে এই ধাপে আপনাকে আরও অতিরিক্ত বেশ কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এবং ডিপার্টমেন্ট অফ লেবার যতক্ষণ পর্যন্ত সন্তুষ্ট না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই ধাপ এর কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এই ধাপের আবেদন আপনার পক্ষে মালিক বা তার আইনজীবী ইউএস সিটিজেনশিপ এন্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টে করবেন। এটি মূলত আপনার ইমিগ্রেশনের আবেদন বা গ্রিন কার্ডের আবেদন। এই ধাপে সরকারি ফি ৭০০$ এছাড়া আপনি যদি প্রিমিয়াম সার্ভিস নিতে চান সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ২৫০০ ডলার জমা দিতে হবে। এই ধাপে ১৫ দিন থেকে ৪৫ দিন সময় লাগে প্রিমিয়াম সার্ভিস এর ক্ষেত্রে। সাধারণ সার্ভিসে তিন থেকে চার মাস লেগে যেতে পারে।

এখানে উল্লেখ্য যে আপনি যদি ইউএসএ অবস্থান করে থাকেন অর্থাৎ আমেরিকায় থাকেন তাহলে আপনি সরাসরি পরবর্তী ধাপে আবেদন করবেন। যদি আপনি আমেরিকার বাহিরে থাকেন তাহলে আপনাকে ওদের নেশনাল ভিসা সেন্টার এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশে ল্যান্ডিং পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। বাংলা ভাষায় বললে ইমিগ্রেশন ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে হলে আপনাকে ইউএস এম্বেসি ঢাকা থেকে ইমিগ্রেশন ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। এই ভিসা সংগ্রহ করতে হলে ওদের নেশনাল ভিসা সেন্টার এর মাধ্যমে অ্যাপোয়েন্টমেন্ট বুক করতে হবে এবং নির্দিষ্ট তারিখে গিয়ে এম্বাসিতে পাসপোর্ট সহ স্বশরীরে জমা দিয়ে আসতে হবে। পাসপোর্ট জমা দেয়ার আগে অবশ্যই এম্বাসি কর্তিক নিয়োজিত মেডিকেল সেন্টার হতে মেডিকেল টেস্ট করাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় টিকা গ্রহণ করে সেই সার্টিফিকেটগুলো নিয়ে এমব্যাসিতে যেতে হবে।

ষষ্ঠ ধাপ: Change Status to Legal Permanent Resident (Greencard): ওয়ার্ক পারমিট, ট্রাভেল পারমিট তথা ভিসা এবং I-40 অ্যাপ্রুভ হওয়ার পর আপনি আপনার পরিবার সহ সকলের জন্য গ্রীন কার্ডের আবেদন করতে পারবেন। এই আবেদন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কাজে যোগদান করতে হবে এবং সেখানকার ডিপার্টমেন্ট অফ লেবারের ইনস্পেকশন রিপোর্ট থাকতে হবে। না হলে এই কার্ডের আবেদন রিজেক্ট হয়ে যাবে। মূলত এখানে ডিপার্টমেন্ট অফ লেবার দেখতে চায় যে আপনার কাছে ভিসা বিক্রি করা হয় নাই। আপনি জেনুইন ওয়ার্কার এবং গিয়ে কাজে যোগদান করেছেন। এই প্রসেস হতে সময় লাগে ৩ থেকে ৯ মাস। এই ধাপে সরকারি ফি ১২২৫$ প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক আবেদনকারীর জন্য এবং ৭৫০$ বাচ্চাদের জন্য। এই ধাপটি সম্পন্ন হলে অর্থাৎ আপনার গ্রিনকার্ড অ্যাপ্রুভ হলে আপনি আমেরিকার ভবিষ্যত নাগরিক হিসাবে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন।

এখানে প্রত্যেকটি ধাপে কত সময় এবং কত টাকা খরচ হয় সেটা বিস্তারিত লেখা হয়েছে তারপরও আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে আরেকবার বলে দিচ্ছি সরকারি ফি বাবদ ৩৫০০+৭০০+১২২৫=৫৪২৫$ ডলার খরচ হবে। যদি আপনি নিজে নিজে করেন অথবা আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন কেউ করে তাহলে এই খরচটি হবে। আপনি যদি কোনো আইনজীবী নিয়োগ করেন তাহলে কমপক্ষে ৬০০০-১৫০০০ ডলার ফি দিতে হবে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এটি একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া এবং অনেক খরচ এর বিষয় রয়েছে। সে কারণে এই প্রোগ্রামটি সবার জন্য না।

আমাদের এ সার্ভিসটি রয়েছে। আপনি চাইলে আমাদের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার খরচ হবে সাধারণ আবেদনের ক্ষেত্রে ৩০ হাজার ডলার ও সময় লাগবে ৯ থেকে ১৬ মাস এবং প্রিমিয়াম আবেদনের ক্ষেত্রে ৪৫ হাজার ডলার ও সময় লাগবে ৮ থেকে ১২মাস। এখানে এটুজেড প্যাকেজ অর্থাৎ এর বাহিরে আপনার কোন খরচ হবে না। এখানে অগ্রিম ছাড়া আবেদনের কোনো সুযোগ নেই। কারণ বুঝতেই পারছেন, কেউ তার পকেটের পয়সা খরচ করে আপনার জন্য আবেদন করবে না। ২০০-৩০০ ডলার হলে হয়তো করা যেত, যেহেতু কয়েক হাজার ডলার সুতরাং অগ্রিম ছাড়া করা যাবে কিনা এই প্রশ্ন অবান্তর। যাদের সামর্থ্য নেই তারা এড়িয়ে যান!!! আঙ্গুর ফল টক বলে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করার কোন মানে হয় না।

আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন পরিচিত যে কেউ যদি জব অফার জোগাড় করে দিতে পারেন সে ক্ষেত্রে আমরা এই সার্ভিসটি দিতে মাত্র ৩০০০ ডলার চার্জ করব। যাদের কানাডার জব অফার সম্পর্কে ধারণা আছে তারা সবাই জানেন কানাডা থেকে একটি ভ্যালিড জব অফার পাওয়া গেলে এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকলে ভিসা মোটামুটি নিশ্চিত। একইভাবে ইউএস থেকে একটি ভ্যালিড জব অফার এবং লেবার সার্টিফিকেট অর্থাৎ ওয়ার্ক পারমিট যেটা প্রেম নামে পরিচিত পাওয়া গেলে আপনার ভিসা রিজেক্ট হওয়ার কোন চান্স নেই। কেননা আপনার ভিসা আমেরিকা থেকে অর্থাৎ তাদের নেশনাল ভিসা সেন্টার -NVC থেকে এপ্রুভ হয়ে আসবে। আপনাকে শুধু এম্বাসী থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

অনুরোধ করছি, দয়া করে পোস্ট বুঝে বুঝে ভালোভাবে পড়ে দেখুন। তারপর আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন, যদি আগ্রহী হন। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।